নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দুর্ভিক্ষের কথা বলেননি, তিনি বৈশ্বিক সংকটের কথা বলেছেন। বিএনপি দুর্ভিক্ষ বলে মিথ্যাচার করছে। প্রধানমন্ত্রী জনগণের চিন্তায় রাতে ঘুমান না। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এ সংকট বাংলাদেশ সামলে উঠবে। বিএনপির আমলে রিজার্ভ ছিল পাঁচ কোটি আর বর্তমানে দেশের রিকশাওয়ালারা পর্যন্ত রিজার্ভের খবর রাখে। এটা প্রধানমন্ত্রীর কৃত্বিত। দেশে যে পরিমাণ রিজার্ভ আছে তা দিয়ে বাংলাদেশের ছয় মাস আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা স্টেডিয়াম মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সম্মেলনের উদ্বোধনকালে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল হওয়ায় বিএনপির অন্তরজ্বালা হচ্ছে। তাদের আমলে কোনো উন্নয়ন হয়নি। তারা কী বলে জনগণের নিকট ভোট চাইবেন? বিএনপিকে মানুষ ভোট দেবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। যাকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখে তাকে কেউ হত্যা করতে পারে না। শেখ হাসিনাকে ২০ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আল্লাহ তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে কেউ তাঁকে মুছে ফেলতে পারবে না। দেশের হৃদয় তাঁকে ধরে রেখেছে। যদি মিথ্যা বলার অপরাধে কাউকে নিষিদ্ধ করা হতো, তাহলে মির্জা ফখরুল ও বিএনপি নিষিদ্ধ হতো।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বিশেষ অতিথি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মাহবুবউল আলম হানিফ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংসদ সদস্য মো. শাজাহান কামাল, নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও আনোয়ার হোসেন খান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এম এ মোমিন পাটোয়ারী, আব্দুজ্জাহের সাজুসহ স্থানীয় নেতারা।
সম্মেলনে মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তার মুখে মধু অন্তরে বিষ। তারা মিথ্যাচার করে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ক্ষেপিয়ে তুলছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিসেম্বর মাসে রাজপথে ফাইনাল খেলা হবে। খেলা হবে নির্বাচনের কারচুপির বিরুদ্ধে, খেলা হবে আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা, ভোট চুরি, ভুয়া ভোটার সৃষ্টি, দুর্নীতি, দু:শাসন, হাওয়া ভবন, অর্থপাচার ও সুইস ব্যাংকে যাদের একাউন্ট আছে তাদের বিরুদ্ধে। সুইস ব্যাংকের টাকা জনগণের, এ টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে। তবে বর্তমান বৈশ্বিক সংকট সাময়িক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ সংকট কাটিয়ে ওঠা হবে। দুর্নীতি-লুটপাটের বিরুদ্ধে খেলা হবে। তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ডিসেম্বর মাসে ফাইনাল খেলা রাজপথে হবে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করছেন সবার হিসেব প্রধানমন্ত্রীর নিকট রয়েছে। আপনারা শুদ্ধ হয়ে যান, ভালো হয়ে যান, খবর আছে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপি জঙ্গিবাদের বিশ্বস্ত ঘাঁটি, বাংলা ভাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমসহ সব জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে ২০০৪ সালে বিএনপির আমলে।’ এছাড়া ঢাকায় আদালত এলাকা থেকে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারে দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইট ইজ নাও এ ডেড ইস্যু। নির্বাচন হবে সংবিধান মোতাবেক। কেউ তা নিয়ে অপচেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। প্রধানমন্ত্রীর সৎ যোগ্য নেতৃত্তে জনগণের আস্থা আছে। আবারও জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে।’
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে, সেজন্য সবাইকে নির্বাচনে আসতে হবে। কেউ যদি নির্বাচনে না আসে তার দায় একান্তই তাদের। এ দায় আওয়ামী লীগ বা দেশের জনগণ নেবে না।’
সম্মেলনে পুনরায় মিয়া মো. গোলাম ফারুক পিংকুকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
এর আগে ২০১৫ সালের ৩ মার্চ সম্মেলনে একই মাঠে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।